এই লকডাউন কি অাদৌ উঠবে? কবে উঠবে? লকডাউন উঠানোর পর অামাদের কী অবস্থা হবে? অামরা কি তাহলে হার্ড ইমিউনিটির (Herd Immunity) দিকেই যাচ্ছি? এই টাইপের চিন্তাগুলো অামাদের সবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, উত্তর মিলছে না৷
হার্ড ইমিউনিটির ধারণাটা হলো, মূলত একটা কমিউনিটিতে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ লোকজনকে যদি একটা রোগের ইমিউনিটি দেয়া যায় (সেটা ভ্যাক্সিন দিয়ে হতে পারে অথবা ইনফেক্টেড করেও হতে পারে), তাহলে কমিউনিটির বাকি লোকজনদের ঐ রোগটা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। হার্ড ইমিউনিটি পেতে গেলে কমিউনিটির কত পার্সেন্ট লোককে ইমিউনাইজড হতে হবে, এটার একটা সূত্র অাছে। (Ro - 1)/Ro.
এখানে, Ro (R naught) বলতে বোঝায় একটা রোগ কতটা সংক্রামক। ধরা যাক, R naught এর মান 2, অর্থাৎ একজন ব্যক্তি ইনফেক্টেড হলে সে দুইজন ব্যক্তিকে ইনফেক্টেড করতে পারে। সেই ক্ষেত্রে হার্ড ইমিউনিটির মান হবে 1/2. অর্থাৎ প্রায় 50% লোককে immunized হতে হবে।
লেটেস্ট স্টাডি অনুযায়ী Covid-19 এর R naught এর মান 5.7, অর্থাৎ একজন কোভিড-১৯ অাক্রান্ত ব্যক্তি প্রায় 5 - 6 জন ব্যক্তিকে অাক্রান্ত করতে পারে যেটা অাগে 2 -3 জন ধারণা করা হচ্ছিল। এই হিসেবে কোভিড-১৯ এর জন্য হার্ড ইমিউনিটির মান হতে হবে প্রায় 82%.
অামাদের কাছে অাপাতত যেহেতু কোনো প্রকার ভ্যাক্সিন নেই, সুতরাং অামাদের হার্ড ইমিউনিটি পেতে গেলে 82% মানুষকে ইনফেক্টেড করতে হবে। অামরা দুইভাবে ইনফেক্টেড হতে পারি - ১) খুব দ্রুত ২) ধীরে ধীরে।
প্রথম অপশনটি বেছে নিয়ে ইউকের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন। উনি নিজেও ইনফেক্টেড হয়ে অাইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। লক্ষ করুন, যদি প্রথম অপশনটি বেছে নিই, তাহলে এই ইনফেক্টেড পপুলেশনের মধ্যে একটা significant amount of patient এর অক্সিজেন লাগবে, ভেন্টিলেটর লাগবে। অামাদের কাছে এত পরিমাণ ভেন্টিলেটর নেই। তাছাড়া এই ইনফেক্টেড পপুলেশনের মধ্যে যদি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররাও ইনক্লুডেড হয়, তাহলে পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে। সুতরাং কোনোভাবেই প্রথম অপশন নেয়া যাবে না।
অামরা লকডাউন করে অাপাতত অাছি ২য় অপশনে। অর্থাৎ, অামরা ইনফেক্টেড হবো কিন্তু ধীরে ধীরে। তবে এখানেও একটা ব্যাপার অাছে। অামরা যখন লকডাউন তুলে নেবো, তখন শুরু হয়ে যেতে পারে সেকেন্ড ওয়েভ। কারণ, লকডাউনের একেবারে শেষদিকে এসে কেউ ইনফেক্টেড হয়ে asymptomatic থাকবে না, সেটা বলা যাবে না। সুতরাং সেকেন্ড ওয়েভের একটা ভয় থেকেই যায়। তাহলে কি লকডাউন কখনোই খুলবে না?
লকডাউন খুলতে হলে এই ক্ষেত্রে অামাদের কাছে অপশন অাছে তিনটে।
১) ভ্যাক্সিন বের করা
২) ইমিউনিটি যাচাই করে ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া
৩) Prophylaxis
এখন চিন্তা করুন, ভ্যাক্সিন তৈরি একটা দীর্ঘমেয়াদী ব্যাপার। চাইলেই সাথে সাথে ভ্যাক্সিন পাওয়া সম্ভব নয়। সর্বোচ্চ দ্রুততার সাথে কাজ করলেও একটা ইফেক্টিভ সেফ ভ্যাক্সিন বাজারে অাসতে প্রায় ১২ মাস থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে।
সবার ইমিউনিটি যাচাই করে ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া একটা ভালো অপশন, তবে এখানে ইমিউনোলজিক্যাল ক্লাস তৈরি হতে পারে। এতে সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে, you never know.
Prophylaxis হতে পারে অাপাত সময়ের জন্য সবচেয়ে ভালো অপশন। কিছু ড্রাগ prophylaxis হিসেবে প্রস্তাব পেয়েছে, তবে সেগুলো কতটুকু নিরাপদ অার কতটুকু কার্যকর সেটা যাচাই করে দেখা দরকার। একটা অাইডিয়াল prophylactic drug যেটা নিরাপদ, কার্যকর এবং সবাইকেই দেয়া যায়, এমন একটা ড্রাগই হতে পারে বেস্ট অপশন।
We have options but we're lacking decision. Think and choose wisely.
Comments
Post a Comment